নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকম: সোনারগাঁও জি আর ইনষ্টিউশিন স্কুল এন্ড কলেজের অভিভাবক সদস্য নির্বাচন আজ সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ২ জন পদের বিপরিতে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বিন্ধিতা করেন। তারা হলেন মহিলা নেত্রী আলেয়া আক্তার, সোনারগাঁও পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দুলাল মিয়া ও সরকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান আহম্মেদ মোল্লা বাদশার ছেলে আসাদুজ্জামান মোল্লা । নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৫জন। এদের মধ্যে ভোট প্রদান করেছেন ১২শত ৭৬ জন। নির্বাচনে ভোট গননা শেষে আলেয়া আক্তার ৮৭৩ ভোট পেয়ে অভিভাবক সদস্যের মধ্যে প্রথম হয়েছেন। এছাড়া ৮শত ২৩ ভোট পেয়ে ২য় অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন কাউন্সিলর দুলাল মিয়া। অপরদিকে, ৪ শত ৩৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন আসাদুজ্জামান মোল্লা। স্কুল কমিটির নির্বাচনে ৩ জন প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী শিক্ষিত ছিলেন আসাদুজ্জামান মোল্লা । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে মাষ্টার্স করেছেন। তিনি সরকারের একজন প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার খাদ্য কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অপরদিকে, আলেয়া আক্তার সোনারগাঁও জি আর ইনস্টিউশন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। তিনি একজন গৃহিনী পাশাপাশি সোনারগাঁ উপজেলা মহিলা নেত্রী হিসেবে পরিচিত। এদিকে, ২ জন পুরুষ প্রার্থীর মধ্যে কাউন্সিলর দুলাল স্ব-শিক্ষিত। তিনি নিজেকে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন বলে দাবি করেন। স্কুলের অভিভাবক নির্বাচনে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে আসাদুজ্জামান সবচেয়ে বেশী শিক্ষিত হলেও এ নির্বাচনে তিনিই সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন। তিনি মোট ১২ শত ৭৬ ভোটের মধ্যে পেয়েছেন ৪শত ৩৪ ভোট। অপরদিকে, স্কুল কমিটির নির্বাচনে দুলাল স্ব-শিক্ষিত হলেও তিনি ভোট পেয়েছেন ৮শত ২৩টি । স্কুলের অভিভাবক সদস্য পদের নির্বাচনে একজন শিক্ষিত লোক স্ব-শিক্ষিত লোকের কাছে অর্ধেক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হবার বিষয়টি শিক্ষার জন্য কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে উদ্ধেগ প্রকাশ করেছেন সোনারগাঁ গ্যাজুয়েট ফাউন্ডেশন। তারা জানান, বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে শিক্ষার সূতিকাগার। এখান থেকে মানুষ শিক্ষা নিয়ে নিজেকে গড়ে তোলে দেশ ও জাতির কল্যানে নিজেকে নিয়োজিত করেন। সেখানে শিক্ষিত লোক নির্বাচনে পরাজয় বরন করা কোন শুভ লক্ষন হতে পারে না। তবে, যেহেতু দুলাল মিয়া দীর্ঘদিন যাবত এ স্কুলের অভিভাবক পদে নির্বাচন করে জয় লাভ করে আসছেন সেহেতু সে স্ব-শিক্ষিত হলেও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সবার সহযোগিতায় শিক্ষাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এটা তারা আশা প্রকাশ করেন। এদিকে নিউজ সোনারগাঁয়ের অনুসন্ধানে জানা গেছে. সোনারগাঁও জি আর ইনষ্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজ নির্বাচনে ২জন অভিভাবক সদস্যের বিপরিতে ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্ধন্ধিতা করেছে। তাদের মধ্যে আলেয়া আক্তার একজন মহিলা প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে বেশী ভোট পেয়েছেন। এখানে অভিভাবকদের মধ্যে অনেকটা মহিলা প্রীতি কাজ করেছে। তারা ৩জন প্রার্থীর মধ্যে একজন মাত্র মহিলা। এছাড়া আলেয়া আক্তারের বাবার বাড়ি গোয়ালদী এবং শশুর বাড়ি জি আর স্কুলের পিছনে লাহাপাড়া। সে হিসেবে তিনি নিজের বাড়ী ও শশুর বাড়ি এলাকার ভোট টানতে সক্ষম হয়েছেন। এছাড়া তার ব্যবহার আচারনে সহজেই সবাইকে আপন করে নিতে পারেন। তিনি মহিলা নেত্রী হবার কারনে সবাইকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকেন এবং তার ব্যাচের বন্ধু বান্ধবরা আর্থিক ভাবে ও বন্ধুদের আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসীর কাছ থেকে আলেয়াকে ভোট প্রদান করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। সেজন্য তিনি সবার চেয়ে ভোটে এগিয়ে গেছেন। অপরদিকে, দুলাল অভিভাবকদের ভোটে ২য় স্থানে রয়েছেন। তিনি স্বশিক্ষিত হলেও দীর্ঘদিন ধরে এ স্কুলের অভিভাবক পদে নির্বাচন করে জয় লাভ করে আসছেন। তার আচার-আচরন ভাল বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা। এছাড়া সে এলাকার গরীরদের সব সময় সাহায্য সহযোগিতা করে থাকেন। কোন শিক্ষার্থী গরীব হলে তাদের ভর্তি, বই কেনা ও বেতনসহ বিভিন্ন ভাবে সেসব শিক্ষার্থীকে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন। দুলাল অভিভাবকদের সাথে সু-সর্ম্পক বজায় রেখে চলেন ফলে তিনি এ পদে জন্য উপযুক্ত না হলেও এসব কারনে প্রতিবারই তিনি জয়লাভ করেন। এদিকে, আসাদুজ্জান মোল্লা নির্বাচনে ১২ শত ভোটের মধ্যে ৪শত ৩৪ ভোট পেয়েছেন যা অন্য ২ প্রার্থীর তুলনায় অর্ধেক। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে একজন রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান এবং উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাষ্টার্স পাশ করে সরকারের একজন প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তা। তিনি আদমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও তার স্ত্রী ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এছাড়া তার প্রত্যেক ভাই বোন উচ্চ শিক্ষিত ও সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন শিক্ষিত লোকের বিকল্প নেই। সে হিসেবে আসাদুজ্জামান মোল্লা সবদিক দিয়ে একজন যোগ্য ব্যক্তি হলেও অভিভাবকদের ভোটে তিনি সবচেয়ে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। কারণ হিসেবে অনেক অভিভাবকই বলেছেন, আসাদ শিক্ষিত ঠিক আছে কিন্তু তিনি এলাকায় েকারো সাথে তেমন একটা মিশেন না। তাছাড়া তার আচরনগত কিছু সমস্যা রয়েছে। এছাড়া আরো অনেক কারন আছে যা সাধারণ অভিভাবকরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে তিনি শিক্ষিত হলেও অশিক্ষিতের কাছে ভোটের নির্বাচেন পরাজিত হয়েছেন।